Loyalty Card
Coming Soon
বাংলাদেশের রাস্তায় রাস্তায় উঁচু স্পিডব্রেকার অথবা ভাঙ্গা রাস্তায় গাড়ির নিচে ঘষা লাগার কারণে, অনেকেই এই সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়ার উদ্দেশ্যে গাড়িতে বাটি লাগিয়ে গাড়ি উঁচা করে থাকেন। বিশেষ করে যারা সেডান, স্টেশন ওয়াগন, এমপিভি, হ্যাচব্যাক এইটাইপের গাড়ি ব্যবহার করেন। এতে গাড়িতে সুবিধা এবং অসুবিধা দুইটাই সৃষ্টি হয়।
প্রথমেই সুবিধার কথা বলি, গাড়ির স্প্রিং এর সাথে বাটি বসিয়ে গাড়ি উঁচা করলে আপনার গাড়ির গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স বৃদ্ধি পায়। এতে আমাদের দেশের উঁচা স্পিড ব্রেকার এবং ভাঙ্গাচুড়া রাস্তায় আপনার গাড়ি নিয়ে ভোগান্তি অনেকাংশেই কমে যায়। বাটি বসানোর সুবিধা শুধুমাত্র এই একটাই।
আমাদের দেশে জাপানি যেইগাড়িগুলো আসে, সেইগুলো সাধারণত জাপানিরা নিজেদের দেশে ব্যবহারের জন্য তৈরি করে থাকে এবং সেই দেশের রাস্তাগুলোর বেশিরভাগই একদম সমান। কোনও ভাঙ্গাচুড়া নাই। তাই জাপানে গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স নিয়ে কোনও ভোগান্তি পোহানো লাগে না। এবার আসি এ্যালুমিনিয়াম বাটি বসানোর ক্ষতিকারক সমস্যাগুলোতে,
বাটি লাগালে গাড়ির ভরকেন্দ্র পরিবর্তন হয়ে যায়। এতে স্বাভাবিকভাবেই গাড়িটি ফ্যাক্টরীতে ডিজাইন করা ভারসাম্য হারায়। এর ফলে আপনার গাড়ির কম্ফোর্ট অনেকাংশেই কমে যাবে। এছাড়াও বাটি লাগানোর কারণে নানাবিধ সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে এবং কোন কোনটি দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। বাটি লাগানোর কারণে গাড়ির ব্যালেন্স এ সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ্যালুমিনিয়াম বাটি হলে, আওয়াজ করতে পারে, পেছনে বেশি উঁচা হয়ে গেলে, হেডলাইটের পজিশন অন্যরকম হয়ে যেতে পারে। সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, অনেক দাম দিয়ে আপনি গাড়ি কিনছেন, কিন্তু বাটি বসায় উঁচা করলে আপনার গাড়ির সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে যাবে। আর গাড়ি কিনে যদি কম্ফোর্টই স্যাক্রিফাইস করা লাগে, তাইলে আপনার টাকার মূল্য কতটুকু রইলো?
প্রতিকারঃ
গাড়িতে বাটি না বসিয়ে স্পিডব্রেকারের কাছাকাছি আসলে গাড়ির গতি একদম কমিয়ে কোনাকুনিভাবে স্পীডব্রেকারটি আস্তেধীরে অতিক্রম করলেই তলা ঘষা লাগার সমস্যা থেকে বেশীরভাগ সময়ই রেহাই পাওয়া যায়। তবে গাড়ি খুব বেশি লোড থাকলে মাঝেমধ্যে একটু বাধতেও পারে। তবে, গাড়ির পেছনে গ্যাস সিলিন্ডার থাকলে বাটি বসানো ছাড়া উপায় নাই। আরো একটা উপায় আছে, গাড়ির টায়ার সাইজ বড় করতে পারেন। ধরেন, আপনার গাড়ির টায়ার সাইজ 185/60 R15 আপনি আরেকটু বড় সাইজের টায়ার অর্থাৎ 185/65 R-15 ব্যবহার করতে পারেন। এতে গাড়ির গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স কিছুটা বৃদ্ধি পাবে। তবে টায়ার সাইজ বাড়ালে মাইলেজ কিছুটা কমে যেতে পারে।
এভাবে গাড়ী চালাতে ধৈর্যের প্রয়োজন, যা অধিকাংশ পেশাদার ড্রাইভারদের খুব একটা থাকে না। আর আপনি যদি ড্রাইভার দিয়ে গাড়ি চালান, তাইলে বেশিরভাগ ড্রাইভারই গাড়িতে বাটি বসানোর পরামর্শ দিবে। ড্রাইভারের কথার গুরুত্ব না দিয়ে, আপনার ড্রাইভারকে সময় নিয়ে ধৈর্য্যের সাথে স্পীডব্রেকার অতিক্রম করতে বাধ্য করুন। নিজে ড্রাইভ করলেও এই একই কৌশল অবলম্বন করুন। আশাকরি এই কৌশলে ড্রাইভ করলে, বাটি ছাড়াই আপনি আমাদের দেশের রাস্তায় অনায়াসেই গাড়ি ড্রাইভ করতে পারবেন।
আর হ্যাঁ , আপনার যদি মাঝেমধ্যে গ্রামের কাঁচা উঁচানিচা ভাঙ্গাচুড়া রাস্তা অথবা ছোটখাটো অফরোডিং করা লাগে, গাড়িতে যথাযথ গ্রাউন্ডক্লিয়ারেন্স না থাকার কারণে যেই পরিস্থিতিগুলো পার করা একদমই সম্ভব না হয়ে থাকে, তাহলে আপনি গাড়িতে বাটি লাগাতে পারেন। তবে হ্যা, শুধুমাত্র বাটি বসানোর কারণে রাইড কম্ফোর্ট এবং সৌন্দর্য দুইটাই কিন্তু আপনাকে স্যাক্রিফাইস করা লাগবে।
You must be logged in to post a comment.
জাযাকাল্লাহু খাইর। খুব উপকারী একটি লেখা। আমি আমার Toyota Axio 2015 Hybrid নিজে ড্রাইভ করি, বাটি লাগানোর সিদ্ধান্ত প্রায় নিয়ে ফেলছিলাম এই লেখার পড়ার পর সিদ্ধান্ত নিয়েছি লাগাবো না। ধন্যবাদ।