আজকের রিভিউ Toyota Axio নিয়ে। টয়োটা করোলা,বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি বিক্রিত গাড়ির সিরিজ। শুধু বাংলাদেশে না,জাপান কিংবা টয়োটার সবচেয়ে বেশি বিক্রিত গাড়ি হচ্ছে এই করোলা লাইনআপ। ১৯৬৬ সাল থেকে করোলার প্রোডাকশন শুরু হয় এবং বর্তমানে করোলার ১১তম জেনারেশন চলছে। আজকের আলোচনা Toyota Axio Hybrid এর ১০ম জেনারেশনের ২য় ফেইসলিফট নিয়ে। যেটার প্রোডাকশন ২০১৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ছিলো।
এক্সিও হচ্ছে টয়োটার এন্ট্রিলেভেলের সেডান কার। এটাকে একটা বাজেট কার বললেও চলে।বাজেট কার হলেও এক্সিওতে বেশ প্রিমিয়াম কিছু ফিচার্স আছে। বাংলাদেশে বর্তমান বাজার অনুযায়ী এক্সিও গাড়ির দাম ১৮-২৪ লাখ টাকার মধ্যে। প্যাকেজ হিসেবে দামের তারতম্য। এক্সিওতে মোট ৪টা প্যাকেজ হয়।X, G, G+red, WXB,এইগুলো হাইব্রিড/ননহাইব্রিড দুইটা ভ্যারিয়েন্টেই আসে। X সবচেয়ে বেসিক প্যাকেজ। আর WXB সবচেয়ে প্রিমিয়াম প্যাকেজ।
এক্সটেরিয়রঃ এক্সিওর নতুন ফেইসলিফট এর এক্সটেরিয়র ডিজাইনটা বেশ সুন্দর করছে। আগের থেকে অনেক সুন্দর করছে ফ্রন্ট সাইড। বিশাল গ্রিল,দেখতে ভালো লাগে অনেক। সাইড মিররগুলো দরজার সাথে লাগানো। যেটা দেখতে gt86 কিংবা স্পোর্টস কারের মতো। WXB প্যাকেজের সাথে হেডলাইট এ DRL থাকে। এছাড়াও এই ফেইসলিফট এ গাড়িটাকে বেশ ফোলানো হইছে। যেটা গাড়ির সৌন্দর্য অনেকটাই বাড়াইছে আগের তুলনায়। পেছনের লাইটের ডিজাইন ও কিছুটা চেঞ্জ হইছে। যেটা আগেরটা তুলনায় সুন্দর ।
ইন্টেরিয়রঃ এক্সিও ২০১৬ মডেলের গাড়ির ইন্টেরিয়র বেইজ এবং ব্লাক দুইকালারের হয়ে থাকে। এক্স প্যাকেজ এ বেইজ আসে। অন্য প্যাকেজগুলোয় ব্লাক ইন্টেরিয়র। x,g প্যাকেজ এ বেশভালো মানেরই ফ্যাব্রিক সিট থাকে।এবং WXB তে হাফলেদার সিট আসে। এক্সিওতে দুইটা গ্লাভ বক্স আছে। এবং বেশ কয়েকটা কাপহোল্ডার্স আছে।ইন্টেরিয়র ডিজাইন বেশ সুন্দর। সাথে ইনফোটেইনমেন্ট সিস্টেম+রিভার্স ক্যামেরা তোহ থাকছেই। ৪টা এসি ভেন্ট আছে। অটোমেটিক ক্লাইমেট কন্ট্রোল এবং এসিতে Nano E টেকনোলজি আছে!যেটা এসির বাতাস থেকে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাস নষ্ট করে। এক্সিওর গেইজক্লাস্টার অনেক সুন্দর। হাইব্রিড,এইজন্য একটু নীলচে ভাব আছে। সাথে আরপিএম মিটার এবং একটা ৪ইঞ্চি ডিসপ্লে ও আছে গেইজ ক্লাস্টারে। এক্সিওতে বেশ কিছু ভালো ভালো ফিচার্স আসে।যেমনঃ ট্রাকশন কন্ট্রোল,লেইন ডিপার্চার,সেইফটি সেন্সর ইত্যাদি। যেইগুলা অনেক প্রয়োজনীয় ফিচার। এছাড়াও সামনে ৪টা ও পেছনে ২টা, মোট ৬টা এয়ারব্যাগ আছে। কিছু ইউনিট এ পার্কিং সেন্সর ও দেখাযায়। পেছনের সিট এ আর্মরেস্ট আছে। তবে এক্স প্যাকেজ এ থাকে না। এক্সিওতে একটা বড় সুবিধা হচ্ছে, পেছনের সিটে ট্রান্সমিশন প্যানেলের উঁচা অংশটা নাই। যার কারণে পেছনে মাঝখানের যাত্রীর বসতে কোনও সমস্যা হয় না। যথেষ্ট হেড এবং লেগ-স্পেস আছে। এছাড়া পেছনে ২৬০ লিটারের ট্রাংক স্পেস আছে।
ইঞ্জিনঃ Toyota Axio Hybrid এ ব্যবহার করা হয়েছে ১.৫ লিটারের ৪ সিলিন্ডার ইঞ্জিন। যার আউটপুট ৭৪ হর্সপাওয়ার। সাথে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন হাইব্রিড ব্যাটারি তোহ আছে। ব্যাটারি থেকে আরো ৬১ হর্সপাওয়ার আসে। ব্যাটারি মোটামুটি চার্জ থাকলে এক্সিওতে ১৩৩ হর্সপাওয়ার পর্যন্ত পাওয়া যায়। যেইটা এলিয়েন কিংবা প্রিমিও থেকেও বেশি! তবে এভারেজ হিসাব করলে কম্পক্ষে ১১০ হর্সপাওয়ার এর আশপাশে পাওয়া যায় সবসময়ই। এক্সিও র ফুয়েল ইকোনমি বেশ ভালোই।হাইব্রিড গাড়ি হওয়ায়, প্রতি লিটার এ এভারেজ ১৪-১৮ কিঃমি মাইলেজ পাওয়া যায় এবং হাইওয়েতে ২৩-২৭ কিঃমি মাইলেজ পাওয়া যায়।
বর্তমান সময়ে Toyota Axio গাড়ির কম্পিটিটর হচ্ছে Honda Grace গ্রেসের দাম এক্সিও থেকে একটু বেশি হলেও গ্রেস অনেক বেটার একটা গাড়ি। হোন্ডা গ্রেস এ ডুয়াল ক্লাচ ট্রান্সমিশন হওয়ায় ১.৫ লিটারের ইঞ্জিন হওয়া সত্ত্বেও এর ইঞ্জিন থেকে প্রায় ১.৮ লিটারের ইঞ্জিনের পাওয়ার পাওয়া যায়। এছাড়াও গ্রেস এ পেছনের সিটের জন্য এসি র ভেন্ট আছে।যেটা এই বাজেটের অন্য কোনও গাড়িতে নাই। ব্রেকিং সিস্টেম এক্সিও থেকে একটু বেটার।এছাড়াও ইলেকট্রনিক গিয়ারবক্স,এবং বেশ কিছু ভালো ফিচার্স আছে গ্রেস এ
যেইগুলা এক্সিওতে নাই। তবে গ্রেইস এর রিসেল ভ্যালু নাই আমাদের দেশে। এইদিক থেকে এক্সিও এগিয়ে ।