Uncategorized

টায়ার সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

আপনার গাড়ির গুরুত্বপূর্ণ একটি পার্টস হচ্ছে চাকা। চাকা তৈরিতে বিভিন্ন ধরনের উপাদান ব্যবহার হয়। যেমন- টেক্সটাইল, রাবার, স্টীল ইত্যাদি ।আপনার গাড়ির টায়ার যতো খারাপ হতে থাকবে, ততো আপনার জন্য বিপদ ঝুঁকি বাড়তে থাকবে। গাড়ির দূর্ঘটনা ঘটার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটা কারণ হলো, ত্রুটিপূর্ণ চাকা অথবা পুরানো চাকা।

১- কিভাবে বুঝবেন গাড়ির টায়ার কতবছর পুরানো?

গাড়ির চাকায় কিছু  নাম্বার থাকে যেটা দেখে আপনি বুঝতে পারবেন চাকা কতদিন আগে তৈরি করা হয়েছিলো। যদি চাকার গায়ে ২৬ লেখা থাকে এরপর ১৫ থাকে তাহলে বুঝতে হবে চাকাটি ২০১৫ সালের ২৬ সপ্তাহ অর্থাৎ জুলাই মাসে তৈরি করা হয়েছে। চাকার গায়ে শেষের দিকে থাকা নম্বর তিনটির শেষের নাম্বর বছর আর মাস নির্দেশ করে। যেমন- যদি কোন চাকার গায়ে এমন লেখা থাকে, XXX YYY ZZZ 269 , তাহলে বুঝবেন ২৬ সপ্তাহ নির্দেশ করে আর পরের সংখ্যাটি ৯ম বছর নির্দেশ করছে। একটি চাকা সর্বোচ্চ ১০ বছর ব্যবহার করা ভালো।

২- চাকা পুরাতন হলে কতটা বিপদজনক হয়ে ওঠে?

চারটি চাকার উপর ভর করে আপনার গাড়ি চলে। গাড়ির পার্টস , যাত্রী, মালামাল ইত্যাদি সবকিছুই ভার থাকে চাকার উপর। আর এই চাকার ক্ষয়ের কারনে সৃষ্টি হতে পারে ভয়াবহ সব দূর্ঘটনা। দুর্ঘটনার ফলে মৃত্যু পর্যন্ত ও হতে পারে!

৩- বিস্ফোরণের সম্ভাবনা

নতুন চাকার তুলনায় চাকা পুরাতন হলে বিষ্ফোরণ হবার সম্ভাবনা খুব বেশি থাকে। কারন পুরানো চাকা ভেতরে বাতাস ধরে রাখতে পারে না। বেশি চাপ নিতে পারে না। টায়ার বেশি পুরানো হয়ে গেলে নিয়মিত টায়ারের দিকে নজর ‌দিয়ে রাখা উচিত। এছাড়াও টায়ারে হাওয়া দেয়ার সময় অনেক সতর্ক হতে হবে। কারণ, অতিরিক্ত প্রেশারে টায়ার ফেটে যায়। গাড়িতে সবসময় নির্ধারিত প্রেশারে টায়ার মেইনটেইন করা উচিৎ। আপনার গাড়ির সামনের দরজায় লিখা থাকে, আপনার গাড়ির জন্য উপযুক্ত টায়ার প্রেশার। সেই অনুযায়ীই টায়ার প্রেশার রাখবেন। এছাড়াও গাড়িতে টায়ার প্রেশার মনিটরিং সিস্টেম রাখতে পারেন। অনেক প্রয়োজনীয় জিনিস এটি। এটার মাধ্যমে লাইভ টায়ার প্রেশার দেখতে পারবেন। কারণ, গাড়ির টায়ার প্রেশার সবসময় একই থাকে না।

৪- দৃঢ়তা কমে যাওয়া

নতুন টায়ারের গায়ে যে খাঁজ কাটা অংশ দেখা যায় সেগুলো চাকা পুরানো হবার সাথে সাথে মিশে যায়। আর এই রোমশ অংশুলোই টায়ারকে রাস্তার সাথে ধরে রাখতে সাহায্য করে এবং রাস্তার সাথে ঘর্ষণ তৈরি করে। এইগুলোকে গ্রিপ বলা হয়ে থাকে। এই গ্রিপ যদি খারাপ হয়ে যায়, তাহলে গাড়ির ঘর্ষণ শক্তি কমে যায়। যার কারণে, ব্রেক করলে, গাড়ি স্কীড করার সম্ভাবনা থাকে। যা অনেক বিপদজনক এবং দুর্ঘটনার কারণ।

৫- পাংচার হওয়া

টায়ার যখন ক্ষয় হয়ে যায় তখন একেবারে সরু হয়ে যায়। অর্থাৎ টায়ারের পুরুত্ব কমে যায়। তখন টায়ার পাংচার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাছাড়া, টায়ার বেশি ক্ষয় হলে, বড় গর্তে গাড়ির চাকা পড়লেও পাংচার হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে! আর রাস্তায় পড়ে থাকা যেকোন সূক্ষ জিনিস যেমন- ভাঙ্গা গ্লাসের টুকরো বা কোন পিন দিয়ে সহজেই ছিদ্র হয়ে যায়। এছাড়া পুরানো টায়ার থেকে হাওয়া সহজেই বের হয়ে যায় তার ফলে টায়ার পাংচার বেশি হয়। আর হাইওয়েতে এরকম ভাবে টায়ার পাংচার হওয়া খুবই বিপজ্জনক। হাইওয়েতে গাড়ির গতি বেশি থাকা অবস্থায় পাংচার হলে, গাড়ি ড্রাইভারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটার বড় সম্ভাবনা থাকে!

৬- ব্রেকিং সিস্টেম দূর্বল করে দেয়া

সবধরনের গাড়ি সাধারণত অনেক ওজনসম্পন্ন হয়ে থাকে এবং গাড়ির সম্পূর্ণ ওজন চাকার উপরেই থাকে। টায়ারের যে অংশ রাস্তার উপরিভাগে থাকে সেটাকে বলে বিস্তৃত স্ট্র্যাপ। এই স্ট্র‍্যাপ যখন কমে যায়, তাহলে গাড়ির টায়ারের কন্ডিশন খারাপ হয়ে যায়। আর এই অবস্থায় গাড়ির ব্রেকিং খারাপ হয়ে যায়। আর গাড়ির ব্রেকিং সিস্টেম যদি ভালো না থাকে, তাহলে যেইকোনও সময়ে ঘটতে পারে, দূর্ঘটনা!

Leave a Reply